বাংলাদেশে লোডশেডিং এর কারণ কি- লোডশেডিং থেকে রক্ষার উপায়

বাংলাদেশের এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে লোডশেডিংয়ের সমস্যা। আর প্রতিদিন পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলছে দেশের তাপমাত্রা, দেশের মানুষের জীবন যাত্রা হচ্ছে খুবি কষ্টকর। দেশের সাধারন মানুষ যারা খেটে খায় তাদের যেন আর কষ্টের শেষ নেই। মাথার উপর প্রচণ্ড রোদ নিয়ে কাজ করতে হয়। তাই সাধারন মানুষের কষ্ট বেড়ে যায় কয়েকগুণ। তারউপর শুরু হয়েছে ক্রমাগত লোডশেডিং। সারা দিন কাজের পর মানুষ যে একটু শান্তিতে বসবে ফ্যানের নিচে তার কোন উপায় নেই।Banglades e load shedding er karon ki 

সব মিলিয়ে দেশের সাধারন মানুষ এখন আছে খুবি কষ্টে। দিন দিন রোদের তাপমাত্রা বেড়ে চলছে। দেশে এখন সাধারন তাপমাত্রা হচ্ছে ৩৭-৪০ ডিগ্রি। যা আগে কখনই দেখা যেত না। আমরা আগে শুনতাম যে মধ্যপ্রাচ্চে  থাকে অনেক তাপমাত্রা। যা এখন আমাদের দেশে হচ্ছে।

লোডশেডিং কি

দেশের ছোট বড় সবাই আমরা এই কথাটির সাথে পরিচিত, কিন্তু আমাদের অনেকেই জানি না যে লোডশেডিং কাকে বলে। যা জানা আমাদের খুবি দরকার, কারন বাংলাদেশে এখন সবচেয়ে বেশি যা হয় তা হচ্ছে লোডশেডিং। দেশে যে পরিমাণ বিদ্যুতের প্রয়োজন উৎপাদন যদি তার থেকে কম হয় তাহলে বিদ্যুতের ঘাটতি দেখা দেয় ,আর এই ঘাটতি পূরণ করতে বিদ্যুতের লাইন কিছু সময়ের জন্য বন্ধ রাখতে হয, আর এই বন্ধ সময় টুকুকেই লোডশেডিং বলে। যা বাংলাদেশে এখন প্রচুর পরিমানে হচ্ছে। মানুষের জীবন এখন ওষ্ঠাগত।

লোডশেডিং বাংলাদেশে আগেও হত, কিন্তু তা পরিমানে অনেক কম ছিল। কিন্তু বর্তমানে তা বেড়ে অনেক বেশি হয়ে গেছে। দেশের মানুষ এখন লোডশেডিংয়ের কারনে খুবি বিরক্ত। লোডশেডিং বন্ধের নানা রকম উদ্যোগ নেয়া দরকার সরকারের।

লোডশেডিং এর কারন 

অনেক রকম কারনে লোডশেডিং হয়ে থাকে। আমরা এখন আলোচনা করবো কি কি কারনে সাধারণত লোডশেডিং হয়ে থাকে। লোডশেডিং এর কয়েকটি কারন রয়েছে যেমনঃ

  1. বিদ্যুৎ ঘাটতির কারণে
  2.  যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে
  3.  প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে

বিদ্যুৎ ঘাটতির কারনে লোডশেডিং

লোডশেডিং এর প্রথান কারন হচ্ছে বিদ্যুৎ ঘাটতি হওয়া। দেশে যে পরিমান বিদ্যুতের দরকার উৎপাদন যদি তার থেকে ক  হয় তাহলে সেই ক্ষতি পুরন করতে লোডশেডিং হয়ে থাকে। যা আমাদের দেশে এখন চলমান রয়েছে। দেশের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো গ্যাসের অভাবে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সর্ব শেষ বন্ধ হচ্ছে দেশের সবচেয়ে কম খরচে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র পায়রা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। যা কয়লা দিয়ে চলত।

কিন্তু দেশে ডলার সংকটের কারনে নতুন করে কয়লা আমদানি করা যাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রতিদিন ১৩ হাজার টন কয়লা দরকার হয়, যা কর্তৃপক্ষ ডলার সংকটে যোগ দিতে পারছেন না। 

তাই সামনে সদেশে লোডশেডিং আরো ভয়াবহ রূপ ধারন করতে পারে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে গেলে দেশে প্রায় ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতি পড়তে পারে। তাই আমাদের সবাইকে আগে থেকেই সতর্ক থাকতে হবে।

আরো দেখুনঃ লোডশেডিং নিয়ে মজার স্ট্যাটাস,ক্যাপশন ও কবিতা

যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে

যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে মাঝে মধ্যে লোডশেডিং হয়ে থাকে। যা খুবি কম সময় হয়ে থাকে। অনেক সময় ট্রান্সফরমার ব্রাস্ট হয়ে যায়, তার ছিরে যায়, এরকম আরো অনেক রকম যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে লোডশেডিং হয়ে থাকে। যা কর্তৃপক্ষ  তার নিজ তাগিদে ঠিক করে থাকেন। আর যদি তা তাদের নজরের বাহিরে থাকে তাহলে তাদেরকে খবর দিতে হয়। তাহলেই তাঁরা তাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করে থাকেন।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে

 বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ, এই দেশে বছরের প্রায় সময়ই নানা রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দেয, যা বৈশাখ জৈষ্ঠ মাসে প্রকট আকার ধারণ করে। এই সময়টাতে তুলনামূলক অনেক বেশি প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়ে থাকে। এই সময়ে ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের কারণে বৈদ্যুতিক তার ও খুটি ক্ষতিগ্রস্ত  হয়ে থাকে। এবং ঝড়ের কারণে বিভিন্ন জায়গায় গাছ ভেঙে বৈদ্যুতিক তারের উপরে পড়ে থাকে যার কারণে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

যা কর্তৃপক্ষ সময় নিয়ে ঠিক করে থাকেন এই সময়টাতে একটা লম্বা সময় ধরে বিদ্যুৎ বিঘ্ন ঘটে থাকে যা আমরা লোডশেডিং নামে জেনে থাকি। দেশের সারা বছরই কম বেশি এই সমস্যা হয়ে থাকে। তাই এই কারনেও দেশে প্রচুর লোডশেডিং হয়ে থাকে।

load shading theke bacar upay

লোডশেডিং থেকে রক্ষার উপায়

লোডশেডিং একটি জাতীয় সমস্যা। তাই এই সমস্যাকে জাতীয় ভাবেই সমাধান করতে হবে। তবে আমাদের কেউ কিছু ভুমিকা পালন  করতে হবে। যেমন দেশে সবচেয়ে বেশি লোডশেডিং হয় বিদ্যুৎ ঘাটতির কারনে। তাই আমরা যদি আমাদের বিদ্যুৎ খুব সতর্ক হয়ে ব্যাবহার করি, যদি কোন প্রকার অপচয় না করি তাহলে আমরা অনেকটা বিদ্যুৎ বাচাতে পারবে। তাহলে অনেকটা ঘাটতির হাত থেকে রক্ষা পেতে পারি। আরো কিছু কাজ রয়েছে যা আমরা পালন করলে দেশের বিদ্যুৎ ঘাটতি কমাতে পারি। আসুন তাহলে যানে নেয়া যাকঃ

  • বিদ্যুৎ অবচয় বন্ধ করা, আমাদেরকে  বিদ্যুৎ ব্যবহারে আরো বেশি সতর্ক হতে হবে, আমরা যখন ঘর থেকে বের হয়ে যাব তখন লাইট ওপেন বা এসি বন্ধ আছে কিনা তা যাচাই করে নেব। কারণ অযথা বিদ্যুৎ ব্যবহারের ফলে বিদ্যুতের ঘাটতি হয়ে থাকে।
  • প্রাকৃতিক উৎস থেকে শক্তি ব্যবহারের চেষ্টা করা, আমরা সৌর শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুতের পরিবর্তে ব্যাবহার করতে পারি। যা আমাদের দেশের জন্যে খুবি উপকারি হবে।
  • দিনের বেলায় কম বিদ্যুৎ ব্যাবহার করা। দিনে যদি আমরা সূর্যের আলো ব্যবহার করি তাহলের বিদ্যুৎ বেচে যেতে পারে। যা আমরা রাতের বেলায় ব্যাবহার করতে পারি।
  • বিদ্যুৎ অপচয় রোধে সবাইকে সচেতন করা। আমাদের আশেপাশে যারা থাকেন তাদেরকেই সচেতন করতে হবে। যাতে করে তাঁরা বিদ্যুৎ অপচয় থেকে বেচে থাকেন। তাহলেই আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌছতে পারব। 
  • সর্বশেষে সব চেয়ে প্রথান ব্যাবস্থা গ্রহন করতে হবে সরকারকে। দেশের লোডশেডিং সীমার মধ্যে নিয়ে আসতে সরকারকে নানা রকম পদক্ষেপ হাতে নিতে হবে। দেশের চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে। দেশের সকল জনগণকে সচেতন করে তুলতে নানা রকম গন সমাবেশ গড়ে তুলতে হবে। দেশে বড় বড় স্থাপনায় সৌর শক্তি ব্যবহার করার ব্যবস্থা করতে হবে ইত্যাদি।

শেষ কথা 

প্রিয় পাঠিক, আজকে আমরা আমাদের একটি জাতীয় সমস্যা নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। তুলে ধরেছি কিছু সমস্যা ও সমাধানের কিছু উপায়, আশা করি আমাদের এই পোষ্টি আপনাদের ভাল লেগেছে। আপনাদের মূল্যবান মতামত আমাদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না আশা করি। পরবর্তি পোষ্ট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন, ধ্যন্যবাদ। 

আরো পড়ুন-

আগুন নিয়ে ক্যাপশন,স্ট্যাটাস ও কবিতা

বিকাশের টাকা দেখার নিয়ম

অল্প পড়ে ভাল রেজাল্ট করার উপায়

দায়িত্ব নিয়ে উক্তি, স্ট্যাটাস

পড়ায় মনোযোগ ফিরিয়ে আনতে ১০ টি টিপস

ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট দেখার নিয়ম

নতুন চেক বই তোলার নিয়ম

নাম্বার দিয়ে লোকেশন ট্রাকিং-মুহূর্তেই বের করুন নাম্বার পরিচিতি

Leave a Comment